চীন-পাকিস্তানের অর্থনৈতিক করিডোর বিরোধী ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ চীন ও পাকিস্তানের মধ্যকার অথনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্প বিরোধী ভারত। দিল্লির মতে, চার হাজার ৬০০ কোটি ডলারের এ প্রকল্প ভারতের সার্বভৌমত্ব বিরোধী। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ প্রকল্পের আওতায় এ সিপিইসি নির্মাণ করা হবে।
আঞ্চলিক অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতেই এ উদ্যোগ নিচ্ছে বেইজিং। ভারতের অভিযোগ, এ করিডোর নির্মাণ করা হলে সীমান্ত সন্ত্রাস বৃদ্ধি পাবে। সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করতে পাকিস্তান উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও ভারতের অভিযোগ রয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বার্ষিক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিপিইসি পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে যাবে। যা ভারতের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিজনক।’
সিপিইসি নিয়ে এর আগেও ভারত তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে এবং সমালোচনা করেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে চীনের মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়ান প্রদেশ এবং পাকিস্তানের গাদারা বন্দর সংযুক্ত করবে। এটা কাশ্মীরের গিরজিট-বালতিস্তান সীমান্তে পড়েছে। আর এখানেই দিল্লির শঙ্কা।
গত বছর সেপ্টেম্বরে চীনের হাংশুতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিনেড্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেরই মোদি সিপিইসি প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মোদি বলেছিলেন, দুই দেশেরই উচিত তাদের স্পর্শকাতর ও কৌশলগত বিষয়ে পরস্পরের প্রতি নজর রাখা।
পিপলস লিবারেশন আর্মির ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীন সম্প্রতি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র তাদের রণতরী পাঠানোর পর থেকেই চীন এ উদ্যোগ নিয়েছে। তারা তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিরও উদ্যোগ নিয়েছে। ভারত তাদের সব উদ্যোগকেই স্বাগত জানিয়েছেন। তবে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের অতিমাত্রায় শক্তি বৃদ্ধি অবশ্য সমালোচনা করেছে দিল্লি। তাদের মতে, দ্রæত সামরিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টায় বিতর্ক সৃষ্টি চেয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো উচিত। ধীরে ধীরে কাজ করলে তা টেকসই ও স্থায়ী হবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ চীন সাগরের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে ভারত তেল, গ্যাসসহ নানা ধরনের অনুসন্ধানের কাজ করে। ভারত মনে করে, ওই সাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর উচিত শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান করার। ‘
পাকিস্তান প্রসঙ্গে এতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা অবস্থার উন্নতি করতে নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তাদের দেশে থাকা জিহাদিরা প্রতিবেশী দেশে হামলা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, বরং তাদের সমর্থন দিচ্ছে। সাহায্য সহযোগিতা করছে। সে রকম একটি জায়গার মধ্য দিয়ে সিপিইসি গেলে সেটা ভারতের সাবভৌমত্বের জন্য ক্ষকির হবে।’ সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।