সব

নড়াইলে সম্মেলনের দুই বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 18th April 2017at 4:11 pm
66 Views

 

5

উজ্জ্বল রায়ঃ নড়াইলে সম্মেলনের দুই বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি উপজেলা আওয়ামী লীগ। সভাপতি ও সাধারণ নড়াইলে সম্মেলনের দুই বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি উপজেলা আওয়ামী লীগ। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্ধেসঢ়;দ্ব এ কমিটি হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে নেতা-কর্মী।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। লোহাগাড় পাইলট উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। ওই দিন কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে শিকদার আবদুল হান্নান সভাপতি ও সৈয়দ ফয়জুল আমির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কেন্দ্রীয় নেতারা ওই দিন দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে নির্দেশ দিয়ে যান।

নেতা-কর্মীরা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন করে। কিন্তু ২০১৫ সালে যখন ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল, তখন জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকার অজুহাতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।

পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মনোমালিন্যের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াকেবল পেছাতেই থাকে। তাঁরা একসঙ্গে বসে আজ পর্যন্ত আর কমিটি করতে পারেননি। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে সভাপতিকে কমিটি গঠন করতে একসঙ্গে বসার জন্য বলেছি। কিন্তু তিনি বসেননি। বাধ্য হয়ে কমিটি গঠনের জন্য সভাপতি সাহেবকে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ডাকযোগে চিঠি দিয়েছি। এরপরও কমিটি গঠন না হওয়ার দায় আমার না।’

সভাপতি শিকদার আবদুল হান্নান ডাকযোগে চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এটি একটি প্রহসন। দীর্ঘদিন ধরেই কমিটি করার জন্য তাঁকে (সাধারণ সম্পাদককে) বসতে বলছি। ক্যাটাগরি অনুযায়ী দলীয় লোকজন নিয়ে দুজনে মিলে বসতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি তাঁর পকেটের কিছু লোক নিয়ে বসতে চান। তিনি মূলত আওয়ামী লীগ না, চেয়ারম্যান লীগ করেন। তাই আর দুজনের বসা হয়নি। তবে আমি গত জানুয়ারিতে ৬৭ সদস্যের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জেলা আওয়ামী লীগের কাছে জমা দিয়েছি।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ‘কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা রয়েছে চলতি ফেব্রুয়ারির মধ্যে উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি বানিয়ে দিতে হবে। না হলেও আমরা কেন্দ্রে জানাব। তখন সেখান থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, সৈয়দ ফয়জুল আমির উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। শিকদার আবদুল হান্নান তাঁর আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৫ মার্চ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হয়। নির্বাচনে দুজনই দলীয় মনোনয়ন চান। কাউন্সিলরদের ভোটে দলীয় মনোনয়ন পান সৈয়দ ফয়জুল আমির। সেই থেকে দুজনের মনোমালিন্যের শুরু। এর খেসারত দিতে হচ্ছে লোহাগড়া আওয়ামী লীগকে।

গত দুই বছর উপজেলা আওয়ামী লীগ কোনো দলীয় কর্মসূচি পালন করেনি। কোনো কর্মকাণ্ড নেই। এমনকি ১৫ আগস্টে জাতীয় শোক দিবসও পালিত হয়নি উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে। এতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। তাঁরা নিষ্ধিসঢ়;ক্রয় হয়ে পড়ছেন। বেড়েছে হতাশা। গড়ে উঠছে না নতুন নেতৃত্ব। সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

সূত্রটি আরও জানায়, গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে কমিটি গঠন বিষয়ে সভা ডাকেন সৈয়দ ফয়জুল আমির। সেখানে যাননি শিকদার আবদুল হান্নানসহ উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকজন নেতা। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) অধিকাংশ চেয়ারম্যান সভায় ছিলেন। উপস্থিত নেতা-কর্মীরা বলেন, সাধারণ সম্পাদককে দ্রুত কমিটি গঠনের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে।

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জয়পুর ইউপির চেয়ারম্যান আখতার হোসেন। তিনি প্রথম বলেন, ‘ওই দিন বলেছি তিন দিনের মধ্যে কমিটি করতে হবে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মূলত ওই দুজনই রাজনৈতিক স্বার্থান্ধ। মাঝেমধ্যে দুজনের মিল দেখা যায়, আবার দ্বন্ধসঢ়;দ্বও রয়েছে। কমিটি না থাকায় ওই দুজনই সর্বেসর্বা। সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া লাগে না, জবাবদিহি করতে হয় না। খুব ভালো আছেন তাঁরা। কিন্তু লোহাগড়ায় আমাদের দল তো শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিসঢ়;দ্বতা করেছিলেন বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল করিম। তিনি বলেন, প্রতি মাসে কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করার কথা গঠনতন্ত্রে আছে। চার মাস অন্তর বর্ধিত সভা করতে হবে। এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি সভাও হওয়ার কথা।


সর্বশেষ খবর