সব

‘প্রধান বিচারপতি কীভাবে বললেন, আইনের শাসন নেই?’

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 9th May 2017at 12:12 pm
43 Views

6

ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আইনের শাসন নেই কোথায়? আজকে আইনের শাসন আছে বলেই জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। সোমবার সন্ধ্যায় দশম জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রসঙ্গে টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি কীভাবে বললেন, আইনের শাসন নেই? একজন নেত্রী মামলায় ১৪০ দিন সময় চায়, তাকে ১৪০ দিন সময় দেওয়া হয়। বিচার বিভাগ স্বাধীন বলেই তাকে সময় দেওযা হচ্ছে।

একই মামলায় ৪০ থেকে ৫০ বার রিট হচ্ছে। সেই রিট নিষ্পত্তিতে সময় দেওয়া হচ্ছে। আমরা তো কোনোদিন হস্তক্ষেপ করছি না। তাহলে স্বাধীনতা নেই কীভাবে? আইনের শাসন নেই কোথায়?’

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে ৭৫০টি পত্রিকা, ৩৪টি টিভি রয়েছে। দেখলাম অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এই দেশে বাকস্বাধীনতা নেই। টিভিতে বসে বসে দিনরাত আমাদের বিরুদ্ধে সমানে কথা বলা হচ্ছে। টক শো, আলোচনায় একেবারে স্বাধীনভাবে কথা বলছে। আমাদের সমালোচনা যখন করা হয়, কই কেউ কি তাদের গিয়ে গলা টিপে ধরেছে যে এ কথা বলা যাবে না?’

তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র লিখেই যাচ্ছে, হ্যাঁ কেউ যদি হলুদ সাংবাদিকতা করে, মিথ্যা অসত্য তথ্য দেয়, কারও যদি চরিত্রহনন করে, নিশ্চই তারও অধিকার আছে সেখান থেকে নিজের ওপর মিথ্যা দোষারোপ থেকে রক্ষা পাবার। সেটা নেবার অধিকার সকলেরই আছে। এখানে একেবারে স্বাধীনতা নেই এটা যারা বলেন, এখানে আমাদের দেশে কিছু লোক আছে, এই লোকগুলি একসময় মনে করত একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি এলে তাদের মূল্য বাড়বে, তারা একটা পতাকা পেতে পারেন, তারা একটা কিছু হতে পারেন। তাদের একটু তোষামদি করা হয়। তাদের মূল্যটাও একটু বেশি থাকে।

আর গণতান্ত্রিক পরিবেশে তারা তাদের সুযোগটা কম থাকে। তাদের স্বাদ আছে ক্ষমতায় আসার, কিন্তু জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার সাধ্য নাই। অনেকে চেষ্টাও করেছে দল গঠনের, সাড়া পায়নি মানুষের কাছ থেকে। এটা যদি জনগণ সাড়া না দেয় তার দোষ কার? এরাই নানা কথা বলে বেড়াচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো সংসদ সদস্য বা সাধারণ ব্যক্তি কেউ যদি মানহানির মামলা করে, এটার দোষ কীভাবে হয়? সে যদি অপরাধ না করে তাহলে মামলা মোকাবিলা করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। সেটা তো করতে পারবে না, কারণ হলুদ সাংবাদিকতা করে ফেলেছে।’

সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বদনাম করা এটাই তাদের চরিত্র। মনে হচ্ছে, বদনাম করতে পারলেই নাগরদোলার মতো ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেই আশায় তারা থাকে। সেই আশায় গুড়েবালি। এ দেশে সেটা আর হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের গণমাধ্যম সম্পূর্ণভাবে স্বাধীনতা ভোগ করছে, স্বাধীন আছে। বাকস্বাধীনতা ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে। স্বাধীনতা ভোগ করতে হলে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারো অধিকার ক্ষুণ্ণ করা স্বাধীনতা নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বিরুদ্ধ গ্রেনেড হামলা হয়েছে। আমরা বিএনপির সময় কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলাম, তা করতে দেয়নি। ওই সময় মিছিল ও মিটিং করতে দিত না। আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আইভিসহ আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। এর ওপর সংসদে আলোচনা করতে চাইলে সুযোগ দেওয়া হয়নি। তারা এও বলে, আমি নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে গ্রেনেডে নিয়ে গিয়েছিলাম।’

মামলা মোকাবিলা করতে খালেদা জিয়ার ভয় কীসের?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে হত্যা, লুণ্ঠন, বিদেশে অর্থপাচার ছাড়া দেশকে আর কিছুই দিতে পারেননি। এমনকি এতিমের টাকা পর্যন্ত মেরে খেয়েছেন। এখন অর্থ আত্মসাৎ মামলা মোকাবিলা করতে উনি ভয় পান। বুকে যদি সততার সাহস থাকত, তবে মামলায় তার এতো ভয় কেন? তিনি বলেন, মামলা থেকে পালিয়ে বাঁচতে আদালতে যেতেই উনি ভয় পান। এ পর্যন্ত ১৪০ দিন সময় নিয়েছেন।

হাইকোর্টে প্রায় ৪০টি রিট করে সময়ক্ষেপণ করছেন। এতিমের টাকা যদি প্রথমেই ফেরত দিতেন, তবে তো তাকে মামলা মোকাবিলা করতে হতো না। মেরে দেওয়া টাকাও ফেরত দেবেন না, আবার মামলা মোকাবিলা করতে আদালত থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? যারা এতিমের টাকা পর্যন্ত মেরে খান, তারা ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষকে কী দেবে? ক্ষমতায় থাকতে কী তারা কোনো উন্নয়ন করেছে?’

সরকার উৎখাত ও নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা ও শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদের রাজনীতিই হলো মানুষ হত্যা, অত্যাচার ও নির্যাতন করে ক্ষমতায় যাওয়া।

তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের হাত থেকে কেউই রেহাই পায়নি। সরকার উৎখাত ও নির্বাচন বানচালের নামে তারা নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করেছে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করেছে। তিন বছর ধরেই তারা দেশে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।’


সর্বশেষ খবর