নিরাপদ কাতার গড়ছে লাখউইয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ একটি উন্নত, সভ্য ও জনবান্ধব দেশের প্রথম পরিচয় এর নিরাপত্তাব্যবস্থা। কেবল জনজীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নয়; বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তর যখন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এবং দুর্বৃত্তদের হাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও নিরাপদ থাকে, তখন সেই দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলে দুর্বার গতিতে।
বিশ্বের সবচেয়ে কম অপরাধপ্রবণ দেশ হিসেবে আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে কাতারের নাম। আর মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে কাতার এবারও প্রথম স্থান দখল করেছে। যেসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অক্লান্ত শ্রমের বদৌলতে এই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আজ এই পর্যায়ে, লাখউইয়া এসব বাহিনীর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি বাহিনী।
২০০৩ সালে ১২ নম্বর আমিরি আদেশে এই বাহিনী গঠন করা হয়। এটি কাতারের প্রথম নিয়মতান্ত্রিক সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনী, যা সরাসরি আমিরের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বাহিনীর কার্যক্রম কাতারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে অসীম অবদান রেখে চলেছে।
মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি লাখউইয়া বাহিনীর সদস্যরা কাতারের বিভিন্ন সড়কে প্রয়োজনীয় সময়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাতার ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করে থাকে। পাশাপাশি ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে এই বাহিনীর।
কোথাও অগ্নিকাণ্ড বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ছুটে যায় লাখউইয়া। এ সময় তারা ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এই বাহিনীর উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম ও কর্তব্যের মধ্যে কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অন্য যেসব বাহিনী কাজ করে থাকে, তাদের প্রয়োজনীয় মদদ ও সহযোগিতা দেওয়া অন্যতম।
এ ছাড়া কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নকারী যেকোনো কর্মকাণ্ড ও জঙ্গিবাদ দমন করা এই বাহিনীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। পাশাপাশি কাতারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিনরাত পরিশ্রম করে লাখউইয়া। আর যেকোনো সময় কাতারের আমির, যুবরাজ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় অতিথিদের বাহন চলাচলের পথ নিরাপদ করার গুরুদায়িত্বও এই বাহিনীর কাঁধে অর্পিত।
কাতারে অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, পরিবেশ নষ্ট করাসহ এসব সম্পর্কিত অপরাধ দমনে নিয়োজিত বাহিনীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করাও এই বাহিনীর অন্যতম কাজ। পাশাপাশি কাতারের নাগরিক, অভিবাসী, রাষ্ট্রীয় স্থাপনা, জনসম্পদ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকে লাখউইয়া।
কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সদস্যদের জন্য দক্ষ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে লাখউইয়া সব সময় সচেষ্ট। এর প্রমাণ মেলে কাতারের জাতীয় দিবসে কর্নিশে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্যারেডে লাখউইয়ার সুসজ্জিত মহড়ায়।
এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতারে অনুষ্ঠিত জাতীয় ও আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার, সম্মেলন ও অধিবেশনস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশাতীত সাফল্য দেখিয়ে চলেছে লাখউইয়া। এর ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে এই বাহিনীর মেধা ও বুদ্ধিদীপ্ত কার্যক্রম।