সব

কুয়েতে শুধু ‘খাদেম ভিসা’ বন্ধ, অন্যগুলো স্বাভাবিক রয়েছে

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Wednesday 7th March 2018at 8:38 am
158 Views

আমারবাংলা ডেস্কঃ কুয়েতে গণহারে বাংলাদেশিদের ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি বলে দাবি করেছেন দেশটি সফরে থাকা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। সোমবার কুয়েতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ আল জারাহ বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মর্মে ঢাকাসহ দেশি-বিদেশি মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রচারিত হয়। ওই সব রিপোর্টের প্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিপোর্টগুলো আমি দেখার পর কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়েছি। তারা জানিয়েছেন, দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকদের অনেক ধরনের ভিসা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ভিসা-২০। যা ‘খাদেম ভিসা’ নামে পরিচিত।

পরিবারপ্রতি যেকোনো দেশ থেকে একজন খাদেম নিয়োগের জন্য ভিসা হওয়ার  কথা অর্থাৎ একটি পরিবারে একজন কাজের লোক নিয়োগের বিধান রয়েছে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট খোঁজ নিয়ে দেখেছে অসাধু দালাল চক্র (উভয় দেশের সমন্বয়ে) এক পরিবারের জন্য বাংলাদেশ থেকে খাদেম ভিসায় একাধিক লোক নিয়োগ দিয়েছে। দালাল চক্রের যোগসাজশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি সেখানে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ থেকে খাদেম ভিসায় লোক নিয়োগ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। কোম্পানি ভিসা, কন্সট্রাকশন, ড্রাইভিং, হোটেল ইত্যাদি ভিসা আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, সোমবার দেশটির উপ-পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী খালিদ সোলাইমান আল জারাল্লাহ’র সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। যার ছবি আমি পাঠিয়েছি। মঙ্গলবার দেশটির শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিন্দ বাররাক আল সাবেহ’র সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সবখানেই আমাদের বক্তব্য- আমরাও চাই না কুয়েতসহ বিশ্বের কোথাও অবৈধ বা অনিয়মিতভাবে বাংলাদেশিরা থাকুক।

আমরা বৈধ এবং নিয়মিত অভিবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিদেশে বৈধ কর্মসংস্থানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাছাড়া কুয়েত শ্রমবান্ধব দেশ। সেখানে শ্রমিকদের মজুরি-বেতন বেশ ভালো। তাদের জীবনযাত্রার মানও উন্নত। শ্রমিকরা ডরমিটরিতে থাকার সুযোগ পান। অতিরিক্ত গরমে তাদের ছুটির ব্যবস্থা থাকে। সব মিলে কুয়েতে বাংলাদেশের বৈধ শ্রমিকরা বেশ ভালো আছেন বলে জানান সফররত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। উল্লেখ্য, তার সফরকালেই কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত খবর চাউর হয়। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্লেষণর্ধর্মী রিপোর্ট ছেপেছে বিবিসি বাংলা। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তাদের রিপোর্টে দুবাইয়ে থাকা একজন সাংবাদিককে উদ্ধৃত করে বলা হয়- ডেমোগ্রাফিক ইমব্যালান্স অর্থাৎ কুয়েতে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, তেলের দাম পড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগে চরম অনিয়ম, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানবপাচারের মতো ঘটনাও ঘটছে। দেশটিতে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের কোনো কারণে চাকরি চলে গেলে দেশে ফেরত না যাওয়া এবং পরবর্তীতে অনুমতি ছাড়া কাজ করাসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

মানবসম্পদ খাতে কুয়েতের আরো সহযোগিতার আশ্বাস: এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিমন্ত্রীর কুয়েত সফর বিষয়ে জানানো হয়েছে দেশটির তরফে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদানের কথা স্বীকার করে মানবসম্পদ খাতে আরো সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে কুয়েতের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের কথা উল্লেখ করে বলা হয়- উভয় পক্ষ কুয়েতমুখী বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য একটি সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় একত্রে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দেশে বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে ‘অতি চমৎকার’ উল্লেখ করে উভয়পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা, মানবসম্পদ, অবকাঠামো এবং ব্লু ইকোনমিকের মতো খাতে অংশীদারিত্বের সুযোগ সমপ্রসারণে সম্মত হয়েছেন। তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ সাবাহ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহ’র মধ্যে সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। যা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কুয়েতের উন্নয়ন সহায়তার প্রশংসা করেন। এ সময় কুয়েতের উপমন্ত্রী বিদ্যমান সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো বাড়ানোর আশ্বাস দেন।

 

সূত্র মানবজমিন


সর্বশেষ খবর