তরুণীকে বিজেপি নেতার ধর্ষণ, বিচার চাওয়ায় বাবা খুন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির এক বিধায়ক ও তার দলবল মিলে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছে। অসহায় বাবা সেই অভিযোগ করেছিলেন থানায়।
কিন্তু বছর পার হয়ে গেলেও সেই গণধর্ষণের বিচার মেলেনি। উল্টো বাবাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ।
মেয়েটির পরিবার জানায়, পুলিশের হেফাজতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে ধর্ষক বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার।
এটিকে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আখ্যা দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, এ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেউ রেহাই পাবে না।
কিন্তু ধর্ষক বিধায়কের দম্ভের শেষ নেই। তিনি পদত্যাগ করছেন না বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বুক ফুলিয়ে বলে এসেছেন।
তার মতে, কেউ একটা অভিযোগ করলেই সেটি সত্যি হয়ে যায় না। ওরা নিচুতলার লোক…। এসব তার বিরুদ্ধে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র।
উত্তরপ্রদেশের ডিজি ও পি সিংহ জানিয়েছেন, ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুই পুলিশকর্তা ও চার কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। উন্নাওয়ের এসপি পুষ্পাঞ্জলি দেবী বলেছেন, যে চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
মেয়েটির অভিযোগ, গত বছরের জুনে বিজেপি বিধায়ক ও তার দলবলের ধর্ষণের শিকার হয়েছিল সে। পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এভাবে এক বছর চলে যাওয়ার পর পুলিশ একটি এফআইআর নিয়েছে।
নিগৃহীত মেয়েটি জানায়, কিন্তু তার পর থেকে তাদের ওপর নতুন করে ঝড় বইতে শুরু করে। তাদের কাছে একের পর এক হত্যার হুমকি আসতে থাকে।
তার পরিবারের অভিযোগ, গত ৩ এপ্রিল বিধায়কের ভাই এফআইআর তুলতে মেয়েটির পঞ্চাশোর্ধ বাবাকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যান। তাকে প্রচণ্ডভাবে মারধর করা হয়েছে। কিন্তু এফআইআর তোলেননি তিনি। এর পর ৫ এপ্রিল হঠাৎ অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
ধর্ষকদের বিচার ও বাবার মুক্তির দাবিতে রোববার লাখনাউয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে গল্ফ ক্লাব ফটকের সামনে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই তরুণী।
এর পর সেই ঘটনা দাবানলের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার পুলিশের হেফাজতে তার বাবার মৃত্যুর খবর আসে।
ওই তরুণী জানায়, বাবাকে মারধর করা হয়েছিল। তাদের দীর্ঘদিন ধরেই হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, বিধায়কের বিরুদ্ধে তদন্তের বদলে পুলিশ তরুণীর বাবাকে গ্রেফতার করেছে। তার পর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু। আর ওই বিজেপি বিধায়ক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, এ রাজ্যে কোচিং ক্লাসে যাওয়ার সময় ছাত্রীকে গুলি করা হচ্ছে। …বিজেপি বিধায়ক ধর্ষণ করছে। সূত্র: আনন্দবাজার ও এনডিটিভির।