নড়াইলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন বাজারে দাম না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ
উজ্জ্বল রায়ঃ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নড়াইলে এ বছর বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪১ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ হাজার হেক্টর বেশি।
১৫ দিন আগ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। যদিও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ধান কাটা মাড়াই কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, সরকারি সংগ্রহ শুরু না হওয়ায় বাজারে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তাছাড়া সরকার সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেও প্রান্তিক কৃষকরা এ সুবিধা পান না, গুদামে সিন্ডিকেট করে ধান কেনা হয় বলে কৃষকরা অভিযোগ করছেন।
ধানের বাম্পার ফলনে খুশি হলেও বাজারে দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন নড়াইলের কৃষকরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সরকার ধান সংগ্রহ শুরু না করায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের সস্তায় ধান বেচতে বাধ্য করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নড়াইলের উজিরপুর এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম
জানান, এক মণ ধান উৎপাদনে খরচ ৭০০-৭৫০ টাকা। বর্তমান বাজারে ৭০০-৮০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ তোলা কঠিন। এদিকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা নেই বলে জানান নড়াইল গ্রামের কৃষক কাশেম ও বিজয়পুর গ্রামের কৃষক রতন কুমার।
তারা বলেন, কৃষিই তাদের একমাত্র পেশা। প্রতি বছর ধান বিক্রি করেন, কিন্তু কোনোদিন তারা সরকারি সংগ্রহ অভিযানে ধান বিক্রি করতে পারেননি। তাদের মতো অনেক কৃষকের অভিযোগ, গুদামে ধান দিতে গেলে নানা বাহানায় ধান নেয়া হয় না। এখানে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে না গেলে ধান বিক্রি করা যায় না।
নড়াইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩৮ টাকা কেজি দরে চাল এবং ২৬ টাকায় ধান (১ হাজার ৪০ টাকা মণ) কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি এ ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে। তবে জেলা থেকে কত মণ ধান সংগ্রহ করা হবে তার কোনো নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি। নড়াইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মনোতোষ কুমার মজুমদার নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, প্রতি বছর নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে
কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের দেয়া হয়। সে তালিকা অনুযায়ী তারা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করেন। ধানের টাকা কৃষকদের নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। তবে এখনো তালিকা এসে পৌঁছায়নি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক চিন্ময় রায় নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে তাদের নাম সংগ্রহ করে তালিকা করা হচ্ছে। প্রকৃত কৃষকরাই এ তালিকায় স্থান পাবেন।