নড়াইলের রসনা বিলাসীদের কাছে দিনদিন বেড়েছে চই ঝালের কদর
নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলে খাদ্যের অনুসঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত চই ঝালের কদর বাড়ছে। চইয়ে রয়েছে ওষুধি গুণাগুণ। ফলে বাজারে এর চাহিদা থাকায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চই এর চাষ হচ্ছে।
জানা গেছে, অনেক বছর থেকে নড়াইলের বিভিন্ন গ্রামে পান পাতার মতো দেখতে লতা জাতীয় এক প্রকার চই ঝাল গাছ জন্মে। পরগাছা এ গাছ আম, কাঁঠাল, সুপারি, মেহগুনিসহ বিভিন্ন গাছে বেড়ে ওঠে। অনুকূল আবহাওয়ায় বিনা খরচে দুই-চার বছর পর পরিচর্যা ও মাটির গুনাগুণ ভেদে একটি গাছ হতে তিন থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। সাধারণত চৈত্র-বৈশাখ মাসে এ গাছ লাগাতে হয়।
নড়াইলে চই ঝালের চাহিদা থাকায় বোড়াবাদুরিয়া, ভাটিয়া, রতডাঙ্গা, শেখাটি, আউড়িয়া, উজিরপুর, ধোপাখোলা, দুর্গাপুর, মিঠাপুর, কালিয়া, কচুয়াবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় চুই গাছের চাষ হয়। মাংস, ডাল, ডিমসহ বিভিন্ন রান্নার অনুসঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এ চুই ঝাল। এতে মাংস নরম ও সুস্বাদু হয়। রসনা বিলাসীদের কাছে খুব প্রিয় চই। সদরের বোড়াবাদুরিয়া গ্রামের ডলি দাস, আমাদের নড়াইল প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান, সাংসারিক কাজের ফাঁকে বাড়ি সংলগ্ন জায়গায় তিনি এ চুঁই গাছের চাষ করেন। তার ছোট মাঝারি দিয়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি গাছ রয়েছে।
তিনি বলেন, রান্নার কাজে এর ব্যবহার ছাড়াও ওষুধি গুণ রয়েছে এ চুঁইয়ে। চই খেলে সর্দি-কাশি শরীরের বিভিন্ন ক্ষত ও ব্যথা নিরাময় হয়। চই ঝাল দিলে মাংস রান্না করলে তার স্বাদই অন্যরকম। যারা চই ঝালের মাংস রান্না খেয়েছেন, শুধু তারাই এর স্বাদ বুঝতে পারবেন।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, মজাদার চই ঝাল বিভিন্ন খাদ্যের অনুসঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং ছত্রাকজনিত কারণে এ গাছ মারা যেতে পারে। তবে ঠিকমত পরিচর্যা করলে তা রোধ করা সম্ভব। তবে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, চই ঝাল চাষে প্রযুক্তিগত পরামর্শ এবং সরকারের সহযোগিতা পেলে উৎপাদন আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।