সব

রাজনীতির মাঠে প্রিয়াংকার চমক

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Thursday 27th December 2018at 11:43 am
143 Views

আমারবাংলা ডেস্কঃ শৈশব থেকেই সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকার লালিত স্বপ্ন- চিকিৎসক হবেন; সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। শিক্ষাজীবন শেষ হয় সাফল্যের সঙ্গে। চিকিৎসক হিসেবে শুরু করেন কর্মজীবন। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালেই যোগ দেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে তিনি বসবেন এফসিপিএস পরীক্ষায়। তাই কোনো দিকেই মনোযোগ নেই তার। দিনরাত পড়াশোনা আর কর্মস্থল; কিন্তু হঠাৎ করেই পাল্টে যায় সব। এখন তিনি সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে ধানের শীষ নিয়ে ব্যস্ত ডা. প্রিয়াংকা জেবরিন।

ডা. প্রিয়াংকা জেবরিন রাত-দিন চষে বেড়াচ্ছেন নিজ নির্বাচনী এলাকা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া এক হাজার ৮৪৮ প্রার্থীর মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী তিনি। সর্বস্তরের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন নিজ যোগ্যতায়। নির্বাচনী মাঠে তার প্রতিবন্ধী আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী আতিউর রহমান আতিক।

‘৯৩ সালে জন্ম নেওয়া ডা. প্রিয়াংকার বয়স এখন ২৫। সদ্য রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও শৈশব থেকেই পরিচিত রাজনীতির সঙ্গে, বেড়ে ওঠা রাজনৈতিক পরিবারেই। বাবা হযরত আলী শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

রাজনীতি কখনোই আকর্ষণ করেনি প্রিয়াংকাকে। হেঁটেছেন নিজের স্বপ্নে। ২০০৮ সালে মাধ্যমিক ও ২০১০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক, তারপর ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস। ২০১৬ সালে ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রভাষক হিসেবে যোগদান। এফসিপিএস পরীক্ষায় বসবেন আগামী ৪ জানুয়ারি।

প্রিয়াংকা বলেন, ‘চিকিৎসকতা আমার স্বপ্নের পেশা। বাবা রাজনীতি করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার বাসনা তাই জন্মসুত্রেই। মানুষের জন্য কাজ করব- এ স্বপ্ন থেকেই চিকিৎসকদের বিএনপি সমর্থিত সংগঠন ড্যাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। বিভিন্ন মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে বন্যার্তদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। খুব কাছ থেকে দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র দেখেছি। ঘটনাচক্রে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও আব্বু সবসময়ই বলতেন, আমার পরেই কিন্তু রাজনীতিতে আসবে তুমি। কিন্তু সেটা যে এত তাড়াতাড়ি হবে, বুঝতে পারিনি। আব্বুর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়াতে তার হয়ে আমাকে লড়তে হচ্ছে। আব্বুর সাজানো মাঠটি আমি পেয়েছি। সেই মাঠেই এখন লড়াই করব আমি।’

রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পেছনে আরও একটি উদ্দেশ্য আছে প্রিয়াংকার- জবাবদিহিমূলক একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলা। যেখানে ন্যায়বিচার পাবে সবাই, চর্চা হবে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের। প্রিয়াংকা এও বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিকভাবেই মানুষের সব ধরনের দুর্দশা লাঘব করা সম্ভব। মনপ্রাণ দিয়েই রাজনীতিকে ভালোবাসতে শুরু করেছেন তাই; যেমনটা ভালোবাসেন চিকিৎসা পেশাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টানা ২২ বছর পর বিএনপির প্রার্থী পেয়ে উজ্জীবিত স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরাও। জোটের রাজনীতির স্বার্থে বিগত ৪টি জাতীয় নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয় জামায়াতকে। যদিও কোনো নির্বাচনেই জয়ের মুখ দেখেনি তারা। তাই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে লড়াই করা ডা. প্রিয়াংকা দলকে বিজয়ী করে স্বপ্ন দেখছেন ঘরে ফেরার।

ডা. প্রিয়াংকা বলেন, ‘আমি নিজেও যেহেতু একজন চিকিৎসক ও নারী, তাই নিজ এলাকাসহ দেশে নারীদের অধিকার ও চিকিৎসা নিয়ে কাজ করতে চাই। আমার নিজ আসনে ১৪টি চরাঞ্চল রয়েছে। যেখানে চিকিৎসাসেবা এখনও পৌঁছায়নি ঠিকভাবে। সেখানকার রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে চাই।’ তিনি আরও জানান, নিজ এলাকায় একটি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবেন তিনি। এ ছাড়াও এলাকার উন্নয়নসহ রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করবেন। প্রিয়াংকা বলেন, ‘উন্নয়ন আমার অন্যতম উদ্দেশ্য। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেই উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। এ ছাড়াও দলমত নির্বিশেষে তরুণরা এগিয়ে এলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসবে।’

ভোটের প্রচারের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে প্রিয়াংকা বলেন, ‘এখানে নিরপেক্ষতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অনেক জায়গায় নেই। চলমান রাজনীতি শুধু সরকারি দলের ক্ষমতায়নের জন্য, বিরোধীদের জন্য না।’

সূত্র সমকাল


সর্বশেষ খবর