মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েই রাহুলের রোড-শো
আন্তজাতিক ডেস্কঃ কেরালায় মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন ভারতের কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১২টা নাগাদ দেশটির কেরালা রাজ্যের ওয়ানাড় জেলার কালপেট্টা জেলা কালেক্টরের কার্যালয়ে গিয়ে ‘ওয়ানাড়’ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের আমেথির পাশাপাশি এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করছেন রাহুল। এদিন সকালে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তার সাথে ছিলেন বোন ও দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।
মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েই বোনকে নিয়ে প্রচারণায় নেমে পড়েন রাহুল। হুড খোলা গাড়িতে করে ওয়ানাড়ে ‘রোড-শো’ করেন রাহুল। সাথে ছিলেন কেরালা কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেনিথালা, রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমান চন্ডীসহ দলের রাজ্য নেতারা। হাজার হাজার কংগ্রেস কর্মীরাও অংশ নেয় এই রোড শোয়ে। কেরালায় কংগ্রেস ও তাদের জোট সঙ্গী ইন্ডিয়া ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল)-উভয় দলের পতাকা হাতে নিয়ে যেমন হাজির ছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা তেমনি রাহুলকে স্বাগত জানাতে দুই পাশে সাধারণ মানুষের ঢলও ছিল চোখে পড়ার মতো।
রোড-শোয়ের সেই ছবি অনেকেই আবার মোবাইলে ধারণ করেন। রাহুলের রোড-শো কভার করতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পড়ে যান দুই সাংবাদিক। পরে তাদেরকে উদ্ধার করেন রাহুল নিজে। রোড-শো শেষের পরই রাহুল-প্রিয়াঙ্কা উভয়েই কোঝিকোড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এদিকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর গণমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল বলেন, কেরালায় একটা বার্তা নিয়ে এসেছি, তা হল ‘ভারত একটাই-সেটা উত্তর, দক্ষিণ পূর্ব বা পশ্চিম যাই হোক না কেন। আমার লক্ষ্য হল দক্ষিণ ভারতে একটা অনুভুতি আছে যে কেন্দ্রে মোদিজি এবং আরএসএস যেভাবে কাজ করছে সেটা দক্ষিণ ভারতের সংস্কৃতি ও ভাষার ওপর অত্যাচার। আমি জানি যে সিপিআইএম আমার বিরুদ্ধে লড়াই করবে, আমাকে নিশানা করবে কিন্তু আমি তাদের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলবো না।
দক্ষিণ ভারতের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে রাহুলের বিপক্ষে বামেদের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে পিপি সুনীরকে এবং বিজেপি টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন তুষার ভেল্লাপল্লি। যদিও এই আসন থেকে রাহুলের প্রার্থী হওয়ায় মোটেই খুশি হয়নি কেরালার বাম নেতৃত্ব। বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কংগ্রেসকে তোপ দেগেছে বামেরা। রাহুলকে উচিত শিক্ষা দিতে চায় তারা। বাম নেতৃত্ব রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বলেছে কীভাবে নির্বাচনে লড়াই করতে হয় তা এবার রাহুলকে শেখানো হবে। পাশাপাশি ভোটের ময়দানে একচুল জমিও ছাড়া হবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে তারা।
রাহুলের প্রার্থী হওয়ার পরই বিজেপি নেতারাও তোপ দেগেছে। তাদের অভিমত আমেথি কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই রাহুল ওয়ানেড়ে প্রার্থী হয়েছেন।
যদিও কোন সমালোচনাই গায়ে মাখছে না কংগ্রেস। রাহুলের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত তার দল। বিরোধীদের জবাবে রাহুলে নিজেই জানিয়েছিলেন, ওখানে অনেকেই আমাকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাইছিলেন। দক্ষিণ ভারতের মানুষ মনে করেন বর্তমান সরকার তাদের অবহেলা করেছে। এখানকার মানুষ মোদিকে নিয়ে ভীতশ্রদ্ধ।
আগামী ২৩ এপ্রিল ওয়ানাড়ে লোকসভার ভোট, অন্যদিকে আমেথি-তে নির্বাচন আগামী ৬ মে। দেশজুড়ে গণনা আগামী ২৩ মে।