রাবির সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প ও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির কাজ শুরু
জাহাঙ্গীর আলমঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট হলসমূহের উদ্যোগে ‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’র কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি পুকুর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ও নান্দনিকতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হবে। শুক্রবার সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল সংলগ্ন পুকুর পাড়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া।
উদ্বোধনকালে উপ-উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল সংলগ্ন পুকুর সংস্কারের জন্য প্রাধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রাধ্যক্ষগণ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করে। দাবির ভিত্তিতে প্রশাসন থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’র আওতায় প্রাথমিকভাবে ৭টি পুকুরের পাড় পরিষ্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। পুকুরপাড়ে আগাছা ও ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে। হলগুলোতে আবাসিকরা যাতে পুকুরের পানি গোসল ও সাঁতারের জন্য ব্যবহার করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদেরকে যাতে গ্রন্থাগারের পাঠকক্ষের সামনে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়।
তাই পুকুরপাড়গুলোতে বসে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা, আলোচনা ও আড্ডা দিতে পারে এমন মনোরম পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধার
ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পুকুরপাড়ে আলো, ডাস্টবিন, পানির ফোয়ারা ইত্যাদি স্থাপন করা হবে। তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ও ফিশারিজ বিভাগকে পুকুরে মাছ ছাড়তে বলা হয়েছে। তারা মাছের বৃদ্ধি ও প্রজনন নিয়ে গবেষণা করবে। এতে পুকুরের পানিও পরিষ্কার থাকবে। আশেপাশের তিন হলের প্রাধ্যক্ষ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা এসব দেখাশোনা করবেন বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য। শিক্ষার্থীদেরকে পুকুর ও নিজেদের হল পরিষ্কার রেখে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এই পুকুর সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। বিশেষ করে শহীদ সোহ্ধসঢ়;রাওয়ার্দী হল সংলগ্ন পুকুর পাড় যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তাতে আগামী দশ বছরে হলের প্রথম ব্লক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই আমরা এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছি।’
এসময় শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জুলকার নায়েন বলেন, ‘ছাত্রদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল হলের আশেপাশের পুকুরগুলোর ইজারা বাতিল করে পুকুরের পানিকে গোসল উপযোগী করে তোলা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রাধ্যক্ষ পরিষদে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলাম। উপ-উপাচার্যদ্বয় আমাদের দাবির সঙ্গে সম্পৃক্ততা জানিয়ে এর একটি প্রকল্প হাতে নেন। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবে পুকুরগুলোতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। সেই সাথে এই পুুকুরগুলোকে দৃষ্টিনন্দন এবং কীভাবে সৌন্দর্য বর্ধন করা যায়, ছাত্র ও আশেপাশের সকলের গোসল উপযোগী করা যায়। সেই কারণেই আজকের এই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযান। এসময় পুকুর পাড়ে যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’
অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, ‘এই প্রকল্প শুরুতে চালু হতে হয়তো সময় লাগবে। সবার সহযোগিতা পেলে একটা সময় এটা যেমন দৃষ্টিনন্দন হবে তেমনি শিক্ষার্থীরা এই পুকুরের পাড়ে বসে পড়াশুনার পাশাপাশি বিনোদনও পাবে।’
এসময় উপ-উপাচার্য দফতর, শহীদ শামসুজ্জোহা হল, শহীদ সোহ্ধসঢ়;রাওয়ার্দী হল ও মাদার বখ্ধসঢ়;শ হল প্রশাসন, কৃষি প্রকল্প ও স্টুয়ার্ড শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘সাত পুকুর গবেষণা প্রকল্প’টির আওতায় রয়েছে মন্নুজান, রোকেয়া, সোহরাওয়ার্দী, হবিবুর হল, বিশ^বিদ্যালয় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুকুর, শেখ
রাসেল মডেল স্কুল এবং বিশ^বিদ্যালয় মেডিকেলের সামনের পুকুর। পরবর্তীতে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল পুকুরকেই এই প্রকল্পের আওতায় নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।