বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের নেপথ্য নায়ক এই চারজন?
খেলাধুলা ডেস্কঃ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টদের নায়ক কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে উঠে আসবে রোহিত শর্মা, ডেভিড ওয়ার্নার, কেইন উইলিয়ামসন, জো রুটদের নাম। কিন্তু এই প্রধান পারফর্মারদের পাশাপাশি সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন কিছু ক্রিকেটার। যারা নেপথ্যে থেকে দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছেন।
অ্যারন ফিঞ্চ:
বিশ্বকাপের বেশ আগের ঘটনা, নিউল্যান্ডসে বল ট্যাম্পারিংয়ের ঘটনায় যখন অস্ট্রেলিয়ার মাঠের ক্রিকেট ফোকাসের বাইরে তখন দল সামলানোর দায়িত্ব পান অ্যারন ফিঞ্চ। তখন তাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে। তবে বিশ্বকাপ যত ঘনিয়ে আসে ততই ফিঞ্চ গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠেন। প্রশ্ন ছিল এটা যে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথ যখন ফিরে আসবেন তখন কীভাবে সামলাবেন ফিঞ্চ?
এখন এসব প্রশ্ন অতীত, অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে, মাত্র দুটি ম্যাচ হেরেছে নয় ম্যাচের মধ্যে। স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বড় ব্যবধানে। এসব ক্ষেত্রেই মাঠে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিস্টার ফিঞ্চ। ডেভিড ওয়ার্নার ৩টি সেঞ্চুরি করে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় আছেন ওপরের দিকে। কিন্তু আগের চেয়ে তার ধীরগতির ব্যাটিং আলোচনায় এসেছে বেশ কয়েকবার বিশেষ করে যে দুটি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হেরেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তাকে ব্যাক আপ দিয়েছেন ফিঞ্চ। ৯ ম্যাচে ৫০৭ রান তুলেছেন তিনি, সর্বোচ্চ ১৫৩। স্ট্রাইক রেট ১০২।
জনি বেয়ারস্টো :
ইংল্যান্ড আসর শুরুর আগেই একটা ধাক্কা খায়, জেসন রয়ের দীর্ঘদিনের ওপেনিং পার্টনার অ্যালেক্স হেলস ড্রাগ নেয়ার দায়ে নিষিদ্ধ হন জাতীয় দল থেকে। জেসন রয়ের সাথে কে ব্যাট করবেন? জনি বেয়ারস্টো? নাকি জো রুট? শেষ পর্যন্ত একাদশে ঢুকলেন বেয়ারস্টো।প্রথম ম্যাচে ইমরান তাহিরের স্পিন বুঝতে না পেরে কোনো রান না নিয়ে আউট হয়ে যান। সেই ম্যাচে জয় পায় ইংল্যান্ড।
ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে তুলে আনেন বেয়ারস্টো। এরপর পাকিস্তানের সাথে ৩২, শ্রীলঙ্কার সাথে শুণ্য রানে এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথে ২৭ আউট হন তিনি। এই তিন ম্যাচেই ইংল্যান্ড হেরে যায়। বাংলাদেশের সাথে ৫১, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৪৫ ও আফগানিস্তানের সাথে তার রান ৯০, এই তিন ম্যাচে জয় পায় ইংল্যান্ড। শেষ দুই ম্যাচ যখন ইংল্যান্ডের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই তখন, জনি বেয়ারস্টো করলেন দুটি সেঞ্চুরি। ভারতের বিপক্ষে ১১১, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৬ রান।
লুকি ফার্গুসন :
নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপের শুরু করে শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে। মাত্র ১৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। পহেলা জুনের সেই ম্যাচে ২২ রানে ৩টি উইকেট নেন লুকি ফার্গুসন। তখনো বিশ্বকাপের শুরু কেবল, তাই আলোচনায় আসার মতো কিছু ছিল না।এরপর আফগানিস্তানের সাথে নেন ৩৭ রানে ৪ উইকেট।
তবে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় যখন এলো, অর্থাৎ মাঝপথে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি করে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন ফার্গুসন। গতি ও নিয়ন্ত্রণ মিলিয়ে বিশ্বকাপের অন্যতম সফল বোলার ফার্গুসন। ৭ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ইকোনমি রেট পাঁচের নিচে, গড় সাড়ে আঠার।
জসপ্রিত বুমরাহ :
ভারতের খ্যাতি তাদের ব্যাটিং লাইন আপের জন্য সবসময়, কিন্তু বোলিংও যে কোনো বিশ্বকাপে তাদের প্রধান অস্ত্র হতে পারে সেটা ভাবার মানুষ কমই পাওয়া যাবে। কিন্তু এই বিশ্বকাপে ভারতের অন্যতম বড় শক্তির জায়গা ছিল তাদের বোলিং, মূলত পেস বোলিং।যার নেত্ত্বৃ দিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। জসপ্রিত বুমরাহ বিশ্বকাপের সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে সবচেয়ে কম ইকোনমি রেটে বল করেছেন।
বিশেষায়িত বোলিং অ্যাকশন, গতি ও ইয়র্কারে নিয়ন্ত্রণ সব মিলিয়ে অধিনায়কের জন্য পরিপূর্ণ প্যাকেজ এই বুমরাহ। শুরুতে, মাঝে ও শেষে উইকেটের প্রয়োজনে কিংবা রান রেট সামাল দিতে বুমরাহকে ব্যবহার করে থাকেন বিরাট কোহলি। ফলাফলও এসেছে ভালো, ৮ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন তিনি, প্রথম পাঁচ বোলারের মধ্যে তার ইকোনমি রেট সবচেয়ে কম। গড় ১৯.৫২। মূলত বুমরাহকে ঘিরেই গড়ে ওঠে ভারতের বোলিং পরিকল্পনা।