সময় চাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা
স্টাফ রিপোর্টারঃ জুলাইয়ের আগে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত হচ্ছে না কোনো ট্যানারি।
মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে ভবন নির্মাণ এই সময়ের আগে শেষ হবে না। কিছু কিছু ভবনের নির্মাণকাজ দুই এক মাসের মধ্যে শেষ হলে বাকিদের জুলাই লেগে যাবে। এছাড়া বিদেশ থেকে মেশিনারিজ আনছে অনেক প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করে স্থানান্তরিত হতে জুলাই পর্যন্ত সময় লাগবে। এদিকে, নিদিষ্ট সময়ে স্থানান্তরিত না হওয়ায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই নোটিশের জবাব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেবেন ট্যানারি মালিকরা।
জানা গেছে, বিসিক ও ট্যানারি মালিকদের মধ্যে হওয়া সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হাজারীবাগের সব ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের কথা ছিল। হাজারীবাগ থেকে সাভারে চামড়া শিল্পনগরী স্থানান্তরিত করার জন্য ১২১ জন শিল্পমালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। যদিও দুই দফা সময় বাড়িয়ে ট্যানারি স্থানান্তরের সময়সীমা ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে হাজারীবাগের ট্যানারি সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়মিত মনিটরিং করছে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা)।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর পবার একটি প্রতিনিধি দল ট্যানারি শিল্প স্থানান্তর কার্যক্রমের অগ্রগতি সরেজমিন পরিদর্শন, জরিপ ও পর্যবেক্ষণ করে।
পবার পর্যবেক্ষণে জানা যায়, ১৫৫টি ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ তলার ছাদ ঢালাই হয়ে ৫ম তলার কাজ চলছে। ২টি প্রতিষ্ঠানের ২য় তলার ছাদ ঢালাই হয়ে ৩য় তলার কাজ চলছে। ৫টি প্রতিষ্ঠানের ২য় তলার ছাদ ঢালাই হয়েছে। ৩১টি প্রতিষ্ঠানের ১ম তলার ছাদ ঢালাই হয়েছে। ১১টি প্রতিষ্ঠানের ১ম তলার ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। ৭৪টি প্রতিষ্ঠানের পাইলিং সম্পন্ন বা চলছে, বেইজ ঢালাই হয়েছে বা হচ্ছে, গ্রেটভিম ঢালাই হয়েছে বা হচ্ছে, কলামের ঢালাই হয়েছে বা হচ্ছে।
৩১টি প্রতিষ্ঠান কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেনি। ১২টির সীমানা দেয়াল,গার্ড রুম কিছুই তৈরি করা হয়নি। ২০টির কোনো সাইন বোর্ড নেই (এর মধ্যে ৮টির সীমানা দেয়াল,গার্ড রুম কিছুই নেই)। ৫৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডেশন সম্পন্ন করেছে, ২২ শতাংশ ফাউন্ডেশনের কাজ করছে এবং ২০ শতাংশ শিল্পভবন নির্মাণে কিছুই করছে না। ৫টি প্রতিষ্ঠান ড্রাম স্থাপন করেছে বা স্থাপনের জন্য ফাউন্ডেশনের কাজ করছে।
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক কাজ শুরু হবে। ট্যানারির বর্জ্য তিনটি ইপিএসের (বর্জ্য পাম্পিং ষ্টেশন) মাধ্যমে সিইপিটিতে যাবে। মাত্র ১টি ইপিএস এর নির্মাণ কাজ চলছে। বর্জ্য ইপিএস হয়ে সিইটিপিতে যাওয়ার পাইপ স্থাপনের কাজ চলছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানারিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোহাম্মদ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, বৈঠকে সাভারে স্থানান্তর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবার কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
কবে নাগাদ সাভারে স্থানান্তর সম্ভব হবে এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, সাভারে বালু দিয়ে জমি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য প্রায় ৮০/৮৫ ফুট গভীরে পাইলিং করে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে হয়েছে। এজন্য একটু বেশি সময় লাগছে। তবে ৫-৬টি প্রতিষ্ঠান এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারবে। বাকিদের কাজও দ্রুত শেষ হবে। এছাড়াও বিদেশ থেকে মেশিনারিজ আনছে অনেক প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ করে স্থানান্তর হতে জুলাই মাস পর্যন্ত সময় লাগবে।
তিনি আরো বলেন, যারা নোটিশ পেয়েছে তাদের দ্রুত জবাব দিতে বলা হয়েছে।