সব

প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার প্রমিত মান নিয়ে ছাড় দেওয়া যায় না – টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Friday 6th September 2019at 5:39 am
63 Views

স্টাফ রিপোর্টারঃ  ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই ডোমেইনে নাম লেখার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সম্মান বিসর্জন দেওয়া যাবে না। বাংলা ডোমেইনের নামে বিদ্যমান জটিলতা নিরসনে আন্তর্জাতিক ডোমেইন ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইক্যান এর পূর্ণ সহযোগিতা আদায়ে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার প্রমিত মান নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়া  যায় না।

মন্ত্রী গতকাল বিকেলে বুধবার বিকালে ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে বাংলা ভাষায় ডোমেইনে বাংলা নাম লিখার বিষয়ে আইক্যান বিষয়ক গভর্নমেন্টাল এডভাইজারি কমিটির আইক্যান প্রস্তাব পর্যালোচনা সংক্রান্ত তিন ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

সভায় বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হক,  বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহফুজুল করিম মজুমদার, বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়োর হোসেন. ভাষা প্রযুক্তিবীদ মামুনুর রশিদ এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর মোহাম্মদ দানীউল হকসহ কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বাংলাদেশের ভাষাবজ্ঞিানী-সহ সাধারণ ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ও মতামতকে বাংলা ইউনিকোড লিপি উন্নয়নে বিবেচনায় রাখা অপরিহার্য বলে উল্লেখ করে বলেন,বাংলা ভাষা চর্চা ও গবেষণা, বাংলা ভাষার উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নেওয়া এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে এর প্রয়োগ করা আলাদা কোন এজেন্ডা নয়, এগুলোর সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক।

মন্ত্রী বাংলা ভাষাকে ত্রুটিমুক্তভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলা ভাষায় যখন ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম হয়, তখন বাংলাদেশ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এর ফলে বাংলা ইউনিকোডে বড় ত্রুটি রয়ে গেছে। বাংলা ভাষায় অস্তিত্বহীন অনেক অক্ষর ইউনিকোডে অন্তর্ভুক্ত এবং বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অনেক অক্ষরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কম্পিউটারে বাংলা ভাষার  আবিস্কারক জনাব মোস্তাফা জব্বার জানান, ‘ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম শুরু হয় ১৯৮৭ সালে। বাংলাদেশ এই কনসোর্টিয়ামে ঢুকেছে ২০১০ সালে। ফলে এই ২৩ বছরে বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধিত্ব না থাকায় বিরাজমান সমস্যার   সমাধান হয়নি। মন্ত্রী বলেন, ইউনিকোড দেবনাগরী করায়  আমাদের দাঁড়ি, ডাবল দাঁড়ি তাতে রয়ে গেছে। এর ফলে আমাদের ড়, ঢ়, য় লিখতে ওরা নোকতা ব্যবহার করে।  কিন্তু ইউনিকোডে বাংলার এই সমস্যার কারণে আমরা যখন ডটবাংলায় বাংলা ডোমেইনে লিখতে যাচ্ছি তখন বাংলার ড়, ঢ়, য় এর প্রতিটি অক্ষরেরর জন্য দুটি করে কোড দিতে হয়। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে’ দেবনাগরীতে নোক্তা বলে একটা জিনিস আছে, এই নোক্তা তাদের নানা কাজে লাগে, শব্দের নীচে ব্যবহৃত হয়। আমার নোক্তার যুগে থেকে সেই বিদ্যাসাগরের আমল হতে বেরিয়ে এসেছি বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

বিষয়টি নিয়ে গতবছর স্পেনের বার্সেলোনায় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের সাইড লাইনে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বাংলা ডোমেইন নাম ও ইউনিকোডের যুক্তাক্ষর লেখা সমস্যা সমাধানে আইক্যান কতৃপক্ষের সাথে বৈঠকে মিলিত হন । বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আইক্যান কর্তৃপক্ষের নিকট ইউনিকোডে বাংলা ভাষার সমস্যাসমূহ তুলে ধরেন।  বৈঠকে আইক্যান কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন। বৈঠকে আইক্যান প্রেসিডেন্ট ও সিইও গোরান মারবাই আইক্যান  প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। আইক্যান চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ডেভিড কনার্ডসহ শীর্ষ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে থাইল্যান্ডে ১৯৮৭ সালের অনুষ্ঠিত কনসোর্টিয়ামের সভায় জনাব মোস্তাফ

জব্বার বাংলা ভাষার বিদ্যমান অক্ষরসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে ত্রুটি দূর করার দাবী জানান।  টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন, বাংলা ভাষার মযাদা রক্ষায় আমরা পিছ পা হবো না। সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং আমরা সফল হবো।


সর্বশেষ খবর