‘শফিক রেহমানের গ্রেফতার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনের অংশ’
ডেস্ক রিপোর্টঃ তিন আন্তর্জাতিক সংস্থা এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ) এবং ওয়ার্ল্ড অর্গ্যানাইজেশন অ্যাগেইনেস্ট টর্চার এক যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৮১ বছর বয়স্ক লেখক, মৃত্যুদণ্ডবিরোধী আন্দোলনকারী, টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক শফিক রেহমান পরিকল্পিতভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনের সর্বশেষ শিকার হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৬ এপ্রিল ভোরে সাদা পোশাকে পুলিশ কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করে। বর্ষীয়ান সাংবাদিক, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শফিক রেহমানের বাড়িতে ঢোকার জন্য পুলিশ মিথ্যাভাবে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ’সাংবাদিক’ পরিচয় ব্যবহার করে।
গোয়েন্দা পুলিশের সদর দফতরে নেয়ার পর পুলিশ তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টায় ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক এবং সরকারের সমালোচকদের আটক করা এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করার সর্বশেষ ঘটনা হলো শফিক রেহমানের গ্রেফতার।
এতে বলা হয়, প্রখ্যাত কয়েকজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন বর্তমানে আটক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অগণিত মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।
আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়ার ঘটনাও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। মাহমুদুর রহমান তিন বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৭২টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি যতবারই আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন, ততবারই তার মুক্তিতে বাধা দিতে পুলিশ তার বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করেছে।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তৃতা সম্প্রচারের পর একুশে টিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি আটক করা হয় পর্নগ্রাফি মামলায়।
বিবৃতিতে উইকলি ইকোনমিকস টাইমের সম্পাদক শওকত মাহমুদকে ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট থেকে আটক রাখার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। মাহমুদুর রহমানের মতো তিনিও আদালত থেকে জামিন পেলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে নতুন মামলা দায়ের করে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ৭৯টি মামলা দায়ের করা হয় ২০০৭ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের জন্য।
তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতিতে বলা আরো বলা হয়, সাংবাদিকদের চুপ করিয়ে দেয়া এবং হয়রানি করতে আইনের অপব্যবহার করার ফলে বাংলাদেশে ভীতি এবং সেলফ-সেন্সরশিপের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং নির্বিচার গ্রেফতার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্প্রদায়, বিশেষ করে স্পেশাল প্রসিডিউরস অব দি ইউনাইটেড নেশন্স হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলকে অবশ্যই বাংলাদেশে মতপ্রকাশ দমন বন্ধ করতে সক্রিয় হতে হবে। শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান, আবদুস সালাম, শওকম মাহমুদসহ মতপ্রকাশের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে আটক সব সাংবাদিককে অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে।