সব

সিলেটে পিএসসি পরীক্ষার ৪৫৯টি উত্তরপত্রে আগুন

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Sunday 6th December 2015at 9:39 pm
17 Views

4শিক্ষা ডেস্ক ঃ সিলেট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার ৪শ’ ৫৯টি উত্তরপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালের কোন একসময় ২-৩ বান্ডিল উত্তরপত্রে আগুন দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসনের ধারণা, এটি পাগলের কাণ্ড। তবে এটি কোন পাগলের কাণ্ড নাকি পরিকল্পিত এ নিয়ে জনমনে গুঞ্জন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- রাতে পাহারাদাররা ডিউটি শেষ করে চলে যাওয়ার পর কোন এক সময় পরিকল্পিতভাবে পেপারগুলোতে আগুন দেওয়া হয়েছে। কারণ কোন পাগল জানালার কাঁচ ভেঙে ভিতরে আগুন দেওয়াটা রহস্যজনক।

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়- উপজেলা পরিষদের পুরাতন মিলনায়তনের জানালার কাঁচ ভেঙে ভিতরে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে দেওয়ালের পাশে থাকা বেশ কিছু উত্তরপত্র পুড়ে গেছে। অন্যপাশে আরো অনেক পেপারের বান্ডিল পড়ে রয়েছে। জানালার টাঙানো পর্দার কিছু অংশও পুড়ে গেছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে- ইংরেজি ১৪১টি ও বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের ৩১৮টি উত্তরপত্র পুড়ে গেছে। তবে সামান্য কটি উত্তরপত্র পুড়ে গেলেও বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে গেছে টিনশেডের প্রাচীনতম ভবন উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনটি। এই মাস তিনেক আগেও এই মিলনায়তনে সদর উপজেলার সকল অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো। সৌভাগ্যবশত আগুনের তীব্রতা না ছড়ানোর কারণে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে ভবনটি। ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণ গোবিন্দ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়তো।

এদিকে, ভবনে উত্তরপত্র সংরক্ষিত থাকার পরও এর নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়া অনেকটা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন। উপজেলার সবদিকে সীমানাপ্রাচীর নেই। যে ভবনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে, সেই ভবনের রাস্তার অংশে কোন সীমানাপ্রাচীর নেই। এছাড়া একটি ক্যান্টিন রয়েছে তার পাশে। যেখান থেকে অবাদ যাতায়াতের রাস্তা রয়েছে।

সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন আহমেদ জানান- গোয়াইনঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার পেপারগুলো সদর উপজেলার শিক্ষকরা দেখছেন। ২ তারিখ থেকে উত্তরপত্রগুলো দেখা শুরু হয়েছে। কাল রোববার তা শেষ হওয়ার কথা। এর মধ্যে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ৪৫৯টি উত্তরপত্রের মধ্যে ইংরেজি ১৪১টি ও বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের ৩১৮টি উত্তরপত্র রয়েছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর মাহবুবুর রহমান জানান- আমাদের ধারণা এটি পাগলের কাণ্ড। কারণ এর আগেও স্থানীয় একটি পাগল পার্শ্ববর্তী একটি ভবনের ছাদে আগুন দিয়ে দেয়। পরে তা নেভানো হয়। তিনি আরো বলেন- পরিকল্পিত হলে কেরোসিন বা পেট্রোল ঢেলে তা ছড়িয়ে দেওয়া হতো। তখন তা ভয়াবহ রূপ নিত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান- উপজেলা পরিষদের পাহারাদার হিসেবে ৪-৫ জন রয়েছে। রাতে তারা ডিউটি করে সকালে শিক্ষকরা চলে আসবেন ভেবে চলে যায়। এরমধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে শাহপরাণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

শাহপরাণ থানার ওসি নিজাম উদ্দিন সাধারণ ডায়েরি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- কে বা কারা সেখানে আগুন দিয়েছে, তা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সিলেট বিভাগের উপ-পরিচালক তাহমিনা খাতুন জানান- ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি দুর্ঘটনা। ইতোমধ্যে বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালককে পত্র দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- যে পেপারগুলো পুড়ে গেছে, সেগুলোর ফলাফল দিয়ে দেওয়া হবে। ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না। এ জন্য শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের শংকিত হওয়ার কিছু নেই। এসময় সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা সিলেট জেলার উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

শীর্ষ নিউজ


সর্বশেষ খবর