সব

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০: ডুয়েট বন্ধ ঘোষণা

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Tuesday 8th December 2015at 11:21 pm
20 Views

20স্টাফ রিপোর্টার ঃ  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে গাজীপুরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ছাত্রদের এবং মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে কুদরত-ই- খুদা হল থেকে এক ছাত্রকে মারধর করে বের করে দেয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয়পক্ষে অন্তত ১০জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশংকাজনক। গুরুতর আহত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র চঞ্চল কুমার ও ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রোনিক্স (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছাত্রলীগ কর্মী রুহুল আমিনকে দুপুরে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বাশারের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাসির উদ্দিনের সমর্থকরা মারধর করে কুদরত-ই-খুদা হল থেকে বের করে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান রাতুল সমর্থকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ওই হলে যায়। এ সময় প্রতিপক্ষ সভাপতির সমর্থকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের কর্মী ও সমর্থকরা লোহার রড, লাঠি ও বটি-দা’ নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। তারা আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর ও তছনছ করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সংঘর্ষকালে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে অবস্থান নেয়। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চঞ্চল কুমার এবং ইইই বিভাগের মাসুদ রানাকে প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়াও আহত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ বর্ষের দেবজিৎ চন্দ্র আকাশ, একই বর্ষের ছাত্র রাকিব হোসেন লিংকন, জুয়েল বিশ্বাস, সফিকুর রহমান ও সোলায়মান এবং ইইই’র ছাত্র গিয়াস উদ্দিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের ডুয়েট শাখার সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন জানান, ডুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাতুল ও তার লোকজন দুদিন আগে ছাত্রশিবিরের এক কর্মীকে কুদরত-ই-খুদা হলে উঠিয়ে দেয়। এনিয়ে আমার কয়েক সহপাঠী সোমবার বিকালে ওই হলে গিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাতুলের কর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয় এবং হামলা চালায়। এতে চার-পাঁচ জন কর্মী আহত হয়েছেন। ডুয়েট সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাতুল জানান, ইইই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুহুল আমিন ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভুয়া অজুহাত তুলে আমার কর্মীদের ওপর রড-লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের চারজন ছাত্র আহত হয়েছেন। ডুয়েটের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মফিজুর রহমান ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্যাস্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিতব্য সকল পরীক্ষাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে তারা জানান। জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানা পুলিশ জলকামান ও রায়টকারসহ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত আহত ছাত্র চঞ্চল কুমারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।


সর্বশেষ খবর