সব

বিএনপির কাউন্সিলকে নাটক আখ্যায়িত করলেন প্রধানমন্ত্রী

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Monday 7th March 2016at 9:41 pm
41 Views

51স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিএনপির কাউন্সিলকে ‘নাটক’আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একজন এতিমের টাকা চুরি করার আসামি, আরেকজন ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামি। তারাই হলো বিএনপির নেতা। এই দল জনগণকে আর কী দেবে?

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।

এসময় বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে  প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জন্মভূমি তার ভারত আর প্রিয় ভুমি হলো পাকিস্থান’। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার সমলোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমদের দেশে ফিরিয়ে এনে  জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী জাতির রক্তের সাথে বেইমানী করেছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, হাইকোর্ট বলেছে যে তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তাহলে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর দল মানুষকে কী দেবে? তারা এদেশের রাজনীতিকে কলুষিত করছে।

বিএনপির জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের কথা স্বরন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন দেশের এতগুলো মানুষকে পোড়ালেন, এর জবাব একদিন জাতির কাছে তাকে দিতে হবে।

দেশের সার্বিক উন্নতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎ​সা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে, কিন্তু জিয়া–এরশাদ–খালেদা এ ভাষণ প্রচারে বারবার বাধা দিতে চেষ্টা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতিকে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার চেতনায় গড়ে তোলেন। বঙ্গবন্ধু সাড়ে ৩ বছরের শাসনে বিশ্বের বাংলাদেশের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ২৬ মার্চে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথমে চট্টগ্রামের আ.লীগ নেতা হান্নান প্রচার করেছিলেন। এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলের নেতারাও তা প্রচার করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্বের আড়াই হাজার ভাষার মধ্যে অন্যতম সেরা ভাষণ। ইতোমধ্যে এটি ১২ ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আরও ভাষায় অনুবাদ করা হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এই ভাষণ বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও খালেদা জিয়া এই ভাষণ বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।

সদ্যসমাপ্ত এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের রানারআপ হওয়ার যোগ্যতা অর্জনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছি, রানারআপ হয়েছি। সামনে আরও বহুদূর যাবো।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’—ঠিকই পারেনি। খেলায় এখন বাঙালিকে হিসাব করে বিশ্বের মানুষ। আমি চাই, আমার দেশের প্রতিটি মানুষ এই চেতনা নিয়েই এগিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা এসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদেশে মর্যাদা পেয়েছে। এদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আজ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েছি। প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, শিক্ষার উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মেধাবী, আমরা চাই তারা দক্ষ হয়ে দেশকে গড়ে তুলবে। চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিয়েছি দোরগোড়ায়।

‘আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ভিক্ষা নয়, নিজের পায়ে দাঁড়াবো, দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। মাথা উ‍ঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলবো, কারও কাছে হাত পেতে নয়। মাদের যুব সমাজ, তারা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারাই দেশকে গড়ে তুলবে। বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন,  আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।

এর আগে সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। সকাল থেকে মাইকে বাজানো হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান।


সর্বশেষ খবর