অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জেলা-উপজেলায় বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে
ডেস্ক রিপোর্টঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল মুক্তিকামী জনগণের জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। বাসস্থান মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা।
সরকারের বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকদের আবাসন সুবিধা দেয়া হবে। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এ সুবিধা হতে বঞ্চিত থেকে যান। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা সকলেই বয়োজ্যেষ্ঠ এবং উপার্জনক্ষম না হওয়ায় তাদের পক্ষে ভাড়া খরিদ বা এককালীন অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় তৈরি হবে বহুতল আবাসিক ভবন। ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারি আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করার মধ্যদিয়ে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।
এ লক্ষ্যে প্রতি জেলা/ উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আজকের একনেকে। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কাজ করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং নির্মাণ করা হবে ৮ হাজারটি ফ্ল্যাট। দুই ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৪টি এবং চার ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৮টি অর্থাৎ মোট ৫৩২টি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ইউনিট বা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৯৮২ বর্গফুট। এতে ৩টি বেড রুম, ১টি ড্রইং কাম ডাইনিং রুম, ২টি বাথরুমসহ বারান্দা। তবে যেসব জেলা বা উপজেলায় ৩ বা ততোধিক ভবনের প্রয়োজন হবে সেখানে আবাসন কমপ্লেক্স নির্মাণ করে অন্যান্য সুবিধাদি যেমন- অভ্যন্তরীণ সড়ক, লাইটিং ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। মূল খাস জমির উপর ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। তবে যেসব উপজেলায় খাস জমি পাওয়া না যায় সখানে জমি অধিগ্রহণে করা হবে। রাজধনীর শেরে বাংলা নগরে অনুষ্ঠিত আজকের একনেক বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং এ এসব কথা জানান মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজকের একনেরে একনেকের আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন প্রকল্প হলো স্থানীয় সরকার বিভাগের “জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ” প্রকল্প।
মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ জনজীবন ও সম্পদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ কারণে উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ তথা প্রকল্প এলাকায় গ্রামীণ ও নগর অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুরক্ষার প্রয়োজনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যমান অবকাঠামোর সমীক্ষা জরুরী। এ প্রেক্ষিতে, গ্রামীণ ও নগর অঞ্চলে জনগণের জীবন মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হতে সুরক্ষার প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকার, জিসিএফ এবং কেএফডাব্লিউ অর্থায়নে মোট ৬৮৮.০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি, ২০১৮ হতে ডিসেম্বর, ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।