সব

শেরপুরের শ্রীবরদী গারো পাহাড়ে বন্যহাতির হামলা

AUTHOR: Primenews24bd Desk
POSTED: Saturday 5th January 2019at 7:27 am
85 Views

ফারুক হোসেন (শেরপুর) প্রতিনিধি : ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা। এ উপজেলার ২টি ইউনিয়নের সীমান্তে রয়েছে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া। এতে শ্রীবরদীর ভূ-খণ্ডে আটকা পড়েছে শতাধিক বন্যহাতি।
এসব বন্যহাতি ভারত ভূ-খণ্ডে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে খাদ্যের সন্ধানে আসছে লোকালয়ে। ক্ষতি করছে সীমান্তবাসীদের জানমালের। দীর্ঘদিন ধরে তারা জানমাল বাঁচাতে প্রতিরোধের মুখে।
একদিকে বন্য প্রাণীর আক্রমণে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। অন্যদিকে মানুষের নৃশংসতার বলি হচ্ছে তারাও। এভাবে বছরের পর বছর চলছে প্রাণ দেয়া-নেয়ার খেলা। সরকারি উদ্যোগে হচ্ছে না কোনো স্থায়ী সমাধান। ফলে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এ মৃত্যুর মিছিল থেকে বাঁচতে চায় এলাকাবাসী।
শ্রীবরদী উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে ১০/১২টি গ্রামে বিশ হাজার মানুষের বসবাস। কৃষিনির্ভর এসব এলাকাতে ভারত থেকে নেমে আসা ক্ষুধার্ত বন্যহাতির তাণ্ডবে কৃষকরা বিপর্যন্ত হয়ে পড়ছে। তাই জানমাল বাঁচাতে একে অপরের সঙ্গে লিপ্ত হয় যুদ্ধে।

গ্রামবাসীরা জানান, ভারত ৯০ দশক থেকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু করে। এর আগে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় অবাধ যাতায়াতের সুযোগ ছিল বন্যহাতির। কিন্তু ভারত সরকার গত প্রায় এক যুগ আগে সীমান্ত এলাকায় শক্তিশালী কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ কাজ হাতে নেয়। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ভারতের শতাধিক বন্যহাতি বাংলাদেশে আটকা পড়ে।
১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম বন্যহাতির দল আকস্মিকভাবে সীমান্ত এলাকায় আক্রমণ করেছিল। গত ১৮ বছরে বন্য প্রাণীর আক্রমণে এসব এলাকার অর্ধশত মানুষ প্রাণ হারায়। আহত হয় শতাধিক। এদিকে মানুষের নৃশংসতার বলি হয়েছে ৮টি হাতি ও ২টি বাঘ।
সর্বশেষ প্রায় ২ বছর আগে শ্রীবরদী পৌর শহরের জালকাটা এলাকায় পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসে চিতা বাঘ। খবর পেয়ে মেয়র আবু সাইদ সেখানে গেলে বাঘের অতর্কিত হামলায় আহত হন। এ ঘটনার পর এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে মারা যায় বাঘটি। এর প্রেক্ষিতে শীত এলে সীমান্ত এলাকায় বন্যহাতির সঙ্গে যোগ হয় চিতা বাঘের আক্রমন। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর মধ্যে দাবি ওঠে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের।
সীমান্ত এলাকা বাবেলাকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা বলেন, গারো পাহাড়ের বাসিন্দারা এমনিতেই অনেক সুবিধা বঞ্চিত। এর মধ্যে বন্যহাতির আক্রমনে অনেকে ক্ষেতের ফসল ঘরে তুলতে পারে না। ফলে সারা বছর মানবেতর জীবন কাটান তারা। সম্প্রতি কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ হওয়ায় বন্যহাতির উপদ্রব কিছুটা কমে আসছে। তবে গারো পাহাড়ের প্রত্যেক গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ হলে কমে আসবে বন্যহাতির আক্রমণ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেঁজুতি ধর বলেন, বন্যহাতির হামলায় কেউ আহত বা নিহত হলে তাদেরকে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়াও ধান চাষাবাদ মৌসুমে বন্যহাতি তাড়াতে কোরোসিনের ব্যবস্থা করা হয়।


সর্বশেষ খবর